জিম করতে গিয়ে হার্ট আ্যাটাকে মারা যাওয়ার কারন কি?

জিম করতে গিয়ে হার্ট আ্যাটাকে মারা যাওয়ার কারন কি?

মাঝেমধ্যেই এমন কিছু নিউজ পাওয়া যায় যে “জিম করতে করতে হার্ট অ্যাটাকে- মারা গেলেন বিখ্যাত অভিনেতা….”।  বেশি না, এই কিছুদিন আগেও বিখ্যাত কমেডিয়ান রাজু মারা গেলেন হার্ট অ্যাটাকে। কিন্তু কথা হচ্ছে মানুষ তো ফিট থাকতেই জিমে যায়, এক্সারসাইজ করে। সেই ফিট থাকার স্থানই কি মৃত্যুর কারণ হবে?

একটা কথা আমরা সকলেই শুনে এসেছি এবং মানি-  অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়।  ভালো থাকার জন্য, সুস্থ শরীরের জন্য আমরা নিজেদের ফিট রাখার জন্য জিম, ডায়েট করতেই পারি। কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, প্রোপার ডায়েট না করা, অতিরিক্ত জিমে এক্সারসাইজ করা কখনোই আমাদের শরীরের জন্য সুফল বয়ে আনবে না৷  এতে অকালে প্রাণও হারাতে হতে পারে বলে দাবী বিশেষজ্ঞদের। অতিরিক্ত ওয়ার্ক আউট আপনার ওজন কমানোর ক্ষেত্রে যতটা না হেল্পফুল, তার থেকে বেশি ক্ষতি করে হার্টের।

মানুষের  জীবনে এক্সারসাইজ করা যেমন জরুরি, তেমনি অতিরিক্ত এক্সারসাইজ বর্জন করাও জরুরি। চিকিৎসকদের মতে একজন ফিট মানুষের প্রতিদিন মিনিট ও সপ্তাহে ১৫০-৩০০ মিনিট  নরমাল এক্সারসাইজ বা ৭৫-১৫০ মিনিট ভারী এক্সারসাইজ করলেই যথেষ্ট, এছাড়া এডিশনালি স্ট্রেন্থ ট্রেইনিং নেওয়া যায়। ব্যয়ামের সাথে  স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়াও জরুরি।

হার্ট অ্যাটাক কখন হয়? যখন করোনারি আর্টারি ব্লক হয়ে যায় বা ব্লাড ফ্লো কমে যায় তখন হার্টের ওই অংশের কোষগুলো মরে যায়। আর সিস্টোলিক ফাংশন কমে যায়৷ এটাকে Myocardial Infarction ও বলে।

হার্ট অ্যাটাক হতে পারে বিভিন্ন কারণে যার একটা plaque  জমা হওয়া ও তা ফেটে যাওয়া। Plaque এর কারণে রক্ত প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। ( করোনারি ধমনীতে কোলেস্টেরল ও অন্যান্য উপাদান জমে প্ল্যাক সৃষ্টি করে।  এই অবস্থাকে atherosclerosis বলে। প্ল্যাকের কারণে ধমনীর রাস্তা সরু হয় ও রক্ত প্রবাহ কমে যায়).প্ল্যাক ফেটে গেলে  রক্ত জমা হতে শুরু করে। 

উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান, ডায়াবেটিস, আনহেলদি ডায়েট, মানসিক চাপ, অপর্যাপ্ত ঘুম বা ইনফেকশন  হার্টের ইনফ্লেমেশনের কারণ হতে পারে।এই ইনফ্লেমেশন থেকে Plaque rupture, তারপর তা থেকে  হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। ভারী এক্সারসাইজ এর সময় হার্ট অ্যাটাক ঘটে যখন হার্টের ব্লকেজ আগে থেকে বুঝা যায় না, বা যদি ব্যক্তির আগে থেকে হার্টের সমস্যা থাকে। অতিরিক্ত এক্সারসাইজ এর সময় প্ল্যাক ফেটে যেতে পারে অথবা হার্টে ইলেক্ট্রিকাল ডিস্টার্বেন্স দেখা দিতে পারে, যার ফলে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে।

যাই হোক, অতিরিক্ত কোনোকিছুই ভালো না, তার প্রমাণ জিমে হার্ট অ্যাটাকে ঘটা রিসেন্ট ডেথ কেসগুলো। সকলেরই মনে রাখা উচিত, নিজের শরীরের সুস্থতার আগে বাহ্যিক সৌন্দর্য্যকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত না।

মিথিলা ফারজানা মেলোডি

সোর্স: Team Science Bee

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top