এন্টারটিকা মহাদেশ এ কেনো মানুষ স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারে না তা জানব ? পৃথীবীর সর্বদক্ষিণের জনমানবহীন রহস্যে ঘেরা এন্টারটিকা। এখানকার পরিবেশ পৃথীবির বাকি অংশ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।এটাকে পৃথীবিতে থাকা বিনগ্রহের অংশ বললেও ভুল হবে না। পৃথিবীর সবচেয়ে উচ্চতম, শীতলতম এবং শুষ্কতম মহাদেশ এন্টার্কটিকা। এ মহাদেশের পরিবেশ এতই দুর্গম যে এখানে কোন মানুষের পক্ষে স্থায়ীভাবে বসবাস করা সম্ভব নয়। এন্টারটিকা বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম মহাদেশ। এই মহাদেশ বাংলাদেশের তুলনায় ৯৭ গুণ বড়। অতিতকাল থেকেই এন্টারটিকা মহাদেশে পৌছানো ছিলো বহু অভিযাত্রিক স্বপ্ন। সেই যুগে এখানে পৌছানো আধুনিক প্রযুক্তি ছাড়া পৌছানো অনেকটা চাঁদে যাওয়ার মতো ব্যাপার ছিলো। ব্রিটিশ নাবিক জেমস্ কুক ১৭৩৩ সালে প্রথম এন্টারটিকা মহাদেশের পাশ দিয়ে অতিক্রম করেন। ১৮২০ সালে তিনজন রাশিয়ান এবং একজন আমেরিকান নাবিক সর্বপ্রথম এন্টারটিকা মহাদেশে পা রাখেন। এই মহাদেশের ৯৮ শতাংশ অংশ বরফে। এন্টারটিকা মহাদেশের বরফের চাদরের সর্বনিম্ন পুরত্ব প্রায় এক কিলোমিটার। সাধারণত শীতকালে এন্টারটিকার তাপমাত্রা থাকে -৮০ থেকে -৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমনকি গ্রীস্ম কালেও এখানকার তাপমাত্রা হয় ০ ডিগ্রির কাছাকাছি। এখানকার স্বাভাবিক বাতাসের গতিও সাধারণ ঘুর্ণিঝড়ের গতির চেয়েও অনেক বেশি হয়। যদি আবহাওয়া একটু খারাপ হয় তাহলেই নেমে আসে সাদা অন্ধকার। তখন আগে, পিছে, উপরে, নিচে, ডানে, বামে সবদিকেই শুধু সাদা আর সাদা। এন্টারটিকা পৃথীবির সর্বোচ্চ মহাদেশ। তার উপর এই মহাদেশের পাহাড়গুলো লক্ষ কোটি বছরের বরফের আস্তরে ঢাকা রয়েছে। তুষারপাতের কারণে এন্টারটিকা মহাদেশের উচ্চতা প্রতি বছর প্রায় ৮ ইঞ্চি করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এন্টারটিকার মাঝ বরাবর ফ্রাঞ্চ এন্টারটিক পব্রতশ্রেণী এই মহাদেশকে পূর্ব ও পশ্চিম অংশে ভাগ করেছে, পশ্চিম দিকের তুলনায় এর পূর্ব দিকের শীতের তুখর অনেক বেশী। বেশ বিছু গবেষণার জন্য এন্টারটিকা মহাদেশের বিকল্প জায়গা এ পৃথীবিতে আর নেই। প্রতিবছর গ্রীস্মকালে গড়ে প্রায় ৪ হাজার বিজ্ঞানী এন্টারটিকায় গবেষণার জন্য আসেন। এবং শীতকালে মাত্র ১ হাজারের মত বিজ্ঞানী এই চরম প্রতিকুল আবহাওয়ায় অবস্থান করেন। বিভিন্ন দেশ থেকে আগত বিজ্ঞানীদের সমাজকে টিকিয়ে রাখতে ড্রাইভার, বাবুর্চি বা মেকানিকদের মত কিছু পেশাজীবী লোক কিছু সময়ের জন্য এখানে অবস্থান করেন। এন্টারটিকা মহাদেশে বসবাস করা অনেক কঠিন। কারণ এখানে বসবাস করার জন্য রসদ সরবরাহ করা ভীষণ চ্যালেঞ্জিং। এন্টারটিকা মহাদেশের মোট ২টি ঋতু, শীত ও গ্রীস্মকাল। এই দুই ঋতুতে এন্টারটিকায় সত্যিকার অর্থে একেবারে রাত আর দিন প্রার্থক্য। শীতকালে পুরো এন্টারটিকা মহাদেশ পৃথীবি থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে। কারণ শীতকালে এখানে টানা চার মাস সূর্যই উঠে না। বিপরীতে গ্রীস্মকালে সূর্য চারদিকে ঘুরতে থাকে। কিন্তু কখনই সূর্য অস্ত যায় না। এন্টারটিকায় চাঁদ উঠলে তা টানা এক সপ্তাহ পর্যন্ত দেখা যায়। সমগ্র শীতকাল জুড়ে এন্টারটিকার সূর্য না উঠার কারণ হলো জুলাই মাসে পৃথীবির সূর্যের সবচেয়ে দুরে চলে যায়। সে সময় সূর্যের তাপের অভাবে এন্টারটিকায় প্রচুর শীত থাকে। সারাবছর জুড়ে মাত্র একটি দিন আর একটি রাতের কারণে এখানে থাকা গবেষকরা নিজেদের দেশের সময় অথবা নিকটবর্তী দেশের সময় ব্যবহার করে। পৃথীবির ছয়টি মহাদেশের অধীনে প্রায় ২০০টি দেশ থাকলেও এন্টারটিকা মহাদেশে কোনো দেশ নেই। এর প্রধান কারণ হলো এখানে মানুষের কোনো স্থায়ী বসতি নেই। তবে চারদিকে শুধু বরফে ঢাকা শীতলতম এই মরুভুমিতে পেঙ্গুলিং, তিমি সহ বিভিন্ন প্রকার সৈবাল এবং কিছু অনুজীব উদ্ভিদ রয়েছে। ১৯ শতকের শুরুতে তিমির তেল সংগ্রহ করার জন্যই মানুষ প্রথম এন্টারটিকায় আসতে শুরু করে। তখনও পর্যন্ত খনিজ তেল আবিষ্কার হয়নি। সেই তেলের চাহিদা মেটাতে বাণিজ্যিকভাবে তিমি শিকার করা হতো। এন্টারটিকায় কোনো স্থায়ী বাসিন্দা না থাকায় ১৯০৮ ঐপনিবেশিক ক্ষমতাধর বিট্রেন এন্টারটিকার মালিকানা দাবি করে। বিট্রেনের দেখাদেখি ১৯২৪ সালে ফ্রাঞ্চ, ১৯২৯ সালে নরওয়ে, ১৯৩৯ সালে অস্ট্রেলিয়া এবং ১৯৪৩ সালে আর্জেটিনা এর মালিকানা দাবি করে বসে। পরবর্তীতে ১৯৫৯ সালে ১২টি দেশের মধ্যে এন্টারটিকা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তির বলে কোনো দেশ এন্টারটিকা মহাদেশের মালিকানা দাবি করতে পারবে না। চুক্তির মাধ্যমে এন্টারটিকায় সামরিক কর্মকান্ড এবং খনিজ সম্পদ খনন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪৫টি দেশ এন্টারটিকা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।

এন্টারটিকা মহাদেশ এ কেনো মানুষ স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারে না তা জানব

এন্টারটিকা মহাদেশ পৃথীবীর সর্বদক্ষিণের জনমানবহীন রহস্যে ঘেরা এন্টারটিকা। এখানকার পরিবেশ পৃথীবির বাকি অংশ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।এটাকে পৃথীবিতে থাকা বিনগ্রহের অংশ বললেও ভুল হবে না। পৃথিবীর সবচেয়ে উচ্চতম, শীতলতম এবং শুষ্কতম মহাদেশ এন্টার্কটিকা। এ মহাদেশের পরিবেশ এতই দুর্গম যে এখানে কোন মানুষের পক্ষে স্থায়ীভাবে বসবাস করা সম্ভব নয়। এন্টারটিকা বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম মহাদেশ। এই মহাদেশ বাংলাদেশের তুলনায় ৯৭ গুণ বড়। অতিতকাল থেকেই এন্টারটিকা মহাদেশে পৌছানো ছিলো বহু অভিযাত্রিক স্বপ্ন। সেই যুগে এখানে পৌছানো আধুনিক প্রযুক্তি ছাড়া পৌছানো অনেকটা চাঁদে যাওয়ার মতো ব্যাপার ছিলো। ব্রিটিশ নাবিক জেমস্ কুক ১৭৩৩ সালে প্রথম এন্টারটিকা মহাদেশের পাশ দিয়ে অতিক্রম করেন। ১৮২০ সালে তিনজন রাশিয়ান এবং একজন আমেরিকান নাবিক সর্বপ্রথম এন্টারটিকা মহাদেশে পা রাখেন। এই মহাদেশের ৯৮ শতাংশ অংশ বরফে। এন্টারটিকা মহাদেশের বরফের চাদরের সর্বনিম্ন পুরত্ব প্রায় এক কিলোমিটার। সাধারণত শীতকালে এন্টারটিকার তাপমাত্রা থাকে -৮০ থেকে -৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমনকি গ্রীস্ম কালেও এখানকার তাপমাত্রা হয় ০ ডিগ্রির কাছাকাছি। এখানকার স্বাভাবিক বাতাসের গতিও সাধারণ ঘুর্ণিঝড়ের গতির চেয়েও অনেক বেশি হয়। যদি আবহাওয়া একটু খারাপ হয় তাহলেই নেমে আসে সাদা অন্ধকার। তখন আগে, পিছে, উপরে, নিচে, ডানে, বামে সবদিকেই শুধু সাদা আর সাদা। এন্টারটিকা পৃথীবির সর্বোচ্চ মহাদেশ। তার উপর এই মহাদেশের পাহাড়গুলো লক্ষ কোটি বছরের বরফের আস্তরে ঢাকা রয়েছে। তুষারপাতের কারণে এন্টারটিকা মহাদেশের উচ্চতা প্রতি বছর প্রায় ৮ ইঞ্চি করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এন্টারটিকার মাঝ বরাবর ফ্রাঞ্চ এন্টারটিক পব্রতশ্রেণী এই মহাদেশকে পূর্ব ও পশ্চিম অংশে ভাগ করেছে, পশ্চিম দিকের তুলনায় এর পূর্ব দিকের শীতের তুখর অনেক বেশী। বেশ বিছু গবেষণার জন্য এন্টারটিকা মহাদেশের বিকল্প জায়গা এ পৃথীবিতে আর নেই। প্রতিবছর গ্রীস্মকালে গড়ে প্রায় ৪ হাজার বিজ্ঞানী এন্টারটিকায় গবেষণার জন্য আসেন। এবং শীতকালে মাত্র ১ হাজারের মত বিজ্ঞানী এই চরম প্রতিকুল আবহাওয়ায় অবস্থান করেন। বিভিন্ন দেশ থেকে আগত বিজ্ঞানীদের সমাজকে টিকিয়ে রাখতে ড্রাইভার, বাবুর্চি বা মেকানিকদের মত কিছু পেশাজীবী লোক কিছু সময়ের জন্য এখানে অবস্থান করেন। এন্টারটিকা মহাদেশে বসবাস করা অনেক কঠিন। কারণ এখানে বসবাস করার জন্য রসদ সরবরাহ করা ভীষণ চ্যালেঞ্জিং। এন্টারটিকা মহাদেশের মোট ২টি ঋতু, শীত ও গ্রীস্মকাল। এই দুই ঋতুতে এন্টারটিকায় সত্যিকার অর্থে একেবারে রাত আর দিন প্রার্থক্য। শীতকালে পুরো এন্টারটিকা মহাদেশ পৃথীবি থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে। কারণ শীতকালে এখানে টানা চার মাস সূর্যই উঠে না। বিপরীতে

গ্রীস্মকালে সূর্য চারদিকে ঘুরতে থাকে। কিন্তু কখনই সূর্য অস্ত যায় না। এন্টারটিকায় চাঁদ উঠলে তা টানা এক সপ্তাহ পর্যন্ত দেখা যায়। সমগ্র শীতকাল জুড়ে এন্টারটিকার সূর্য না উঠার কারণ হলো জুলাই মাসে পৃথীবির সূর্যের সবচেয়ে দুরে চলে যায়। সে সময় সূর্যের তাপের অভাবে এন্টারটিকায় প্রচুর শীত থাকে। সারাবছর জুড়ে মাত্র একটি দিন আর একটি রাতের কারণে এখানে থাকা গবেষকরা নিজেদের দেশের সময় অথবা নিকটবর্তী দেশের সময় ব্যবহার করে। পৃথীবির ছয়টি মহাদেশের অধীনে প্রায় ২০০টি দেশ থাকলেও এন্টারটিকা মহাদেশে কোনো দেশ নেই। এর প্রধান কারণ হলো এখানে মানুষের কোনো স্থায়ী বসতি নেই। তবে চারদিকে শুধু বরফে ঢাকা শীতলতম এই মরুভুমিতে পেঙ্গুলিং, তিমি সহ বিভিন্ন প্রকার সৈবাল এবং কিছু অনুজীব উদ্ভিদ রয়েছে। ১৯ শতকের শুরুতে তিমির তেল সংগ্রহ করার জন্যই মানুষ প্রথম এন্টারটিকায় আসতে শুরু করে। তখনও পর্যন্ত খনিজ তেল আবিষ্কার হয়নি। সেই তেলের চাহিদা মেটাতে বাণিজ্যিকভাবে তিমি শিকার করা হতো। এন্টারটিকায় কোনো স্থায়ী বাসিন্দা না থাকায় ১৯০৮ ঐপনিবেশিক ক্ষমতাধর বিট্রেন এন্টারটিকার মালিকানা দাবি করে। বিট্রেনের দেখাদেখি ১৯২৪ সালে ফ্রাঞ্চ, ১৯২৯ সালে নরওয়ে, ১৯৩৯ সালে অস্ট্রেলিয়া এবং ১৯৪৩ সালে আর্জেটিনা এর মালিকানা দাবি করে বসে। পরবর্তীতে ১৯৫৯ সালে ১২টি দেশের মধ্যে এন্টারটিকা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তির বলে কোনো দেশ এন্টারটিকা মহাদেশের মালিকানা দাবি করতে পারবে না। চুক্তির মাধ্যমে এন্টারটিকায় সামরিক কর্মকান্ড এবং খনিজ সম্পদ খনন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪৫টি দেশ এন্টারটিকা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।    

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top