প্রশ্ন: থেলিস কে ছিলেন ? Who is Thales ?
থেলিস (Thales) ছিলেন প্রাচীন গ্রিক গণিতশাস্ত্র, জ্যোতির্বিদ্যা এবং দর্শনের জনক হিসেবে নন্দিত। থেলিস (Thales) এর মাত্র দুটি উক্তি অক্ষত অবস্থায় আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে একটি হলো “সবকিছুই ঈশ্বরে পরিপূর্ণ” এবং অন্যটি “সবকিছুর আদিমতম উপাদান হচ্ছে জল।“
প্রশ্ন: তাকে কেন গ্রীক/পাশ্চাত্য দর্শনের জনক বলা হয়?
থেলিস মূলত তার পানি দর্শনের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। দার্শনিক সিসোরে বলেন, “থেলিস বলেছেন যে পানিই সমস্ত বস্তুর উৎপত্তি স্হল, ঈশ্বর জগতের আত্না এবং তিনি পানি হতেই যাবতীয় বস্তু সৃষ্টি করেন।” অনেক দার্শনিক মনে করতেন যে, থেলিস পানির মাঝে গতিশক্তি আছে বলে ভাবতেন। আর এই পানি হতেই জগতের সমস্ত বস্তুর উৎপত্তি। কিন্তু তার প্রকৃত মূল্য পানি দর্শনের জন্য নয়। সেই আদিম যুগে এমন চিন্তাভাবনার সূত্রপাত সর্বপ্রথম তিনিই ঘটান। কোনো রূপক বা কাল্পনিক উপাখ্যান না দিয়ে জগত সৃষ্টির মূল রহস্য সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দানের কৃতিত্ব সর্বপ্রথম থেলিসের মাঝেই দেখা যায়। সেজন্যই তাকে পাশ্চাত্য দর্শনের জনক বলা হয়ে থাকে।
বিশ শতকের বৈজ্ঞানিক মানদণ্ডে বিচার করলে থেলিসের দর্শনের যে বিশেষ কোন গুরুত্ব আছে তা হলফ করে বলা যায় না। কিন্ত তার স্থায়ী গুরুত্ব অনেক যা কোন মতেই ফেলে দেওয়ার মতো নয়। তার মাধ্যমেই পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস শুরু হয় যা দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিক চিন্তার অগ্র যাত্রা। পরবর্তীকালের উন্নতত্র চিন্তার পেছনে থেলিসের এই প্রশ্নই যুগিয়েছে অফুরন্ত প্রেরণা। থেলিস যে উত্তর দিয়েছে তাতে যুগান্তকারী কিছু থাকুক আর নাই থাকুক, প্রশ্নটি ছিল এক ইতিহাসের স্রষ্টা। শুধু তাই নয়, থেলিস ই ছিলেন ইউরোপীয় দার্শনিকদের মধ্যে প্রথম যিনি বিশ্বের অসংখ্য পদার্থের পেছনে একটি মাত্র মূলতত্ত্ব আছে বলে মনে করেন এবং এই তত্ত্বের আলোকের জগতের ব্যাখ্যার চেষ্টা করেন। এসব কারণে শুধু দার্শনিক হিসেবেই তার পরিচিতি নয় বরং তিনি পাশ্চাত্য দর্শনের জনক। (থেলিস কে ছিলেন)
———–
ইয়াসিন আরাফাত
দর্শন (২০-২১), সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা।