বই- আই এম মালালা
বুক রিভিও
বই- আই এম মালালা
মূল লেখক- মালালা ইউসাফজাই
ভাষান্তর – সরফুদ্দিন আহমেদ
শিক্ষা, স্বাধীনতা মানুষের মৌলিক অধিকার। যেই তা হরণ করতে চাইবে তাকে রোধ করাই তখন প্রয়োজন হয়ে দাড়ায়।
বলছি পাকিস্তানের সোয়াত অঞ্চলের কথা।
যাকে পৃথিবীর স্বর্গের এক টুকরো মনে হয়। উপত্যকায় চারিদিকে ইউক্যালিপটাস গাছ, শীতে তুষারশুভ্র সোয়াত, বসন্তে ইউক্যালিপটাস গাছের পুল ঝরে ঝরে পড়ে। বাতাসে উড়ে উড়ে লোকালয়ে এসে পড়ে।
২০০৮ সালে তেহরিকে তা-লে-বান পাকিস্তান (টিটিপি) এ অঞ্চলে আসার আগে হাজার হাজার পর্যটকদের আনাগোনা থাকত, ব্রিটিশ আমলের বৌদ্ধ মন্দির, বৌদ্ধ মূর্তি এসব ছিল সবার কাছে আকর্ষণীয়।
২০০৯ সালের দিকে টিটিপি এ অঞ্চলে আসে। এরপর থেকে শুরু হয় তাদের মানবেতর জীবন। যারা তা-লে-বানদের সাপোর্ট করত তারা নিরাপদে ছিল, যারা তাদের উগ্রবাদী কাজ কর্মের বিরোধীতা করত তাদেরকে প্রকাশ্যে চাবুকাঘাত, প্রয়োজন হলে গুলিও করা হত।
সবচেয়ে বাজে যে কাজটা ছিল তা হচ্ছে স্কুল বন্ধ করে দেয়া।
সোয়াত অঞ্চলে নারী শিক্ষা আন্দোলন এবং শান্তিকামী আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিল মালালা ইউসাফজাই, এবং তার বাবা জিয়াউদ্দিন ইউসাফজাই।
১২ বছর বয়স থেকে তা-লে-বানদের উগ্রতা এবং শিক্ষার পক্ষে আন্দোলন, সভা, এমনকি বিবিসি ব্লগে লেখালেখি করে ঝড় তুলেছিলেন মালালা ইউসাফজাই। ২০০৯ সালের শেষের দিকে বিবিসি উর্দু, রয়টার্স, এপি এফএফপি সহ দেশি বিদেশি টিভি চ্যানেলগুলো সাক্ষাৎকার নিতে আসে মালালার। তখন থেকেই তা-লে-বানের দৃষ্টি মালালার উপর।
সময়টা ২০০৯ সালের ৯ই অক্টোবর। স্কুল থেকে ফেরার পথে স্কুল বাসে হামলা করে তা-লে-বান। মালালা এবং তার দুই সহপাঠী গুলিবিদ্ধ হয়৷ উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ব্রিটিনের কুইন এলিজাবেথ হসপিটালে।
সুস্থ হওয়ার পর বেশ কিছু সময় তারা ব্রিটেনেই থাকে।
২০১৪ সালে ১৬ বছর বয়সে নারী শিক্ষার ত্যাগী আন্দোলনকর্মী হিসেবে তাকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। মালালাই এখন পর্যন্ত সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ী।
.
মতামত- একজন সুন্নী মুসলিম হলেও ব্যাক্তিগত জীবনে মালালা ছিল একজন মডারেট মুসলিম। নাচ, গান,মুভি দেখা এসবের প্রতি বরাবরই মালালার আকর্ষণ ছিল। কিন্তু তা-লে-বান ছিল সর্বদা রক্ষনশীল মুসলিম, যদিও কিছু ক্ষেত্রে তাদের উগ্রবাদী কাজকর্মও লক্ষ করা যায়। তবে এই বইয়ের প্রতিটি বাক্য আপনার কাছে বেদ বাক্য মনে হলেও এতে যথেষ্ট মিথ্যার আশ্রয় নেয়া হয়েছে। অনেক কিছুই ছিল মালালার বানোয়াট, এবং তা-লে-বানের প্রতি ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।
সর্বশেষ, এই বই আপনাকে সোয়াতের সৌন্দর্য সম্পর্কে জানাবে, আরো জানাবে মালালার সংগ্রামী জীবন সম্পর্কে। যদিও এটি একটি আত্মজীবনী। কিন্তু এটি আপনাকে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়ার ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা দিবে।
#হ্যাপি_রিডিং
#romeo71