৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন : নির্বাচন কমিশন গঠনে আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৬ সদস্যবিশিষ্ট সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ শনিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, হাইকোর্টের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মুসলিম চৌধুরী, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ ছহুল হোসাইন এবং কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক। আনোয়ারা সৈয়দ হক প্রয়াত সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের সহধর্মিণী।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সার্চ কমিটি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’ অনুযায়ী দায়িত্ব ও কার্যাবলি সম্পন্ন করবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সার্চ কমিটির কাজ সম্পাদনে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা করবে।
আইনানুযায়ী সার্চ কমিটি ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আইনে বর্ণিত যোগ্যতা-অযোগ্যতা বিবেচনা করে ১০ জনের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব করবে। এ ক্ষেত্রে সার্চ কমিটি ইসি গঠনে রাজনৈতিক দল এবং পেশাজীবী সংগঠনের কাছ থেকে নামের সুপারিশ নিতে পারবে।
এর আগে ২০১২ ও ২০১৭ সালে সার্চ কমিটি রাজনৈতিক দল এবং পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে। সেখানে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কাছে নাম প্রস্তাব করে। পরে সেই প্রস্তাবের ভিত্তিতে ১০ জনের নাম সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠায়। সেখান থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের নাম ঘোষণা করা হয়।
কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। এর মধ্যে নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ না করা গেলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তারা রুটিন কার্যক্রম করবেন। আর নতুন গঠিত কমিশনের অধীনেই হবে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
নির্বাচন কমিশন গঠনের আইনে বলা হয়েছে, সার্চ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে রাষ্ট্রপতির কাছে দুজন ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে। তিনজন সদস্যের উপস্থিতিতে সার্চ কমিটির সভার কোরাম গঠিত হবে।
সংবিধানে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কোনো সরকারই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়নি। রাজনৈতিক দলগুলো কমিশন গঠনে আইন করার দাবি জানিয়ে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। এতদিন রাষ্ট্রপতি সরাসরি নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিতেন। বিগত দুটি কমিশনও রাষ্ট্রপতি গঠন করেছেন সার্চ কমিটির মাধ্যমে। এক্ষেত্রে সাচিবিক দায়িত্ব পালন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে গত ২০ ডিসেম্বর সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে এবারের সংলাপ শুরু হয়। গত ১৭ জানুয়ারি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শেষ হয় সংলাপ। প্রায় প্রতিটি দলই নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দেয়। তবে বিএনপি সংলাপে অংশ নেয়নি।
পরে স্বল্প সময়ের মধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ চূড়ান্ত করে সরকার। মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদন, সংসদে পাস হওয়ার পর গত ২৯ জানুয়ারি আইনের গেজেট প্রকাশিত হয়। এই আইনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটির বিধান রাখা হয়।
আরও: http://nittosongbad.com/bangladesh
follow page : http://www.facebook.com/nittosongbad