জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি কোর্স করার নিয়ম

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি কোর্স!

আপনারা যারা অনার্স বা ডিগ্রী পাস করেছেন যে কোন জায়গা থেকে, তারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বছর মেয়াদী এলএলবি কোর্স এ ভর্তি হতে পারেন। ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশের যে কোন জেলায় এলএলবি কলেজ গুলো আছে। কয়েকটি জেলায় শুধু নেই। আপনার জেলায় আছে কিনা ইন্টারনেটে সার্চ করে জেনে নিন। গুগলে লিখবেন Nu llb College list ওখান থেকে দেখে নিতে পারেন আপনার জেলায় কলেজটি আছে কিনা। না থাকলে বাংলাদেশের যেকোনো জায়গায় ভর্তি হতে পারবেন।

যারা এইচএসসি পাশের পর চার বছর মেয়াদি এলএলবি অনার্স করেছে এটা তার সমমান নয়। এটা ডিগ্রি সমমান। তবে আপনি এই সার্টিফিকেট দিয়ে ওদের মতই সেম কাজ করতে পারবেন। মানে চার বছর মেয়াদি এলএলবি কোর্স করে উকিল হওয়া যায়, আবার এই দুই বছর মেয়াদী এলএলবি কোর্স করেও উকিল হওয়া যায়।

যারা এইচএসসি পাস তাদের জন্য পাবলিক বা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছর মেয়াদি এলএলবি কোর্স । আর যারা অনার্স বা ডিগ্রি পাস তাদের জন্য দুই বছর মেয়াদী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এই কোর্সটি। এটি শেষে এল.এল.এম করতে পারবেন। এমনকি ব্যরিষ্টারিও পড়তে পারবেন।

কখন ভর্তি হবেনঃ

সাধারণত জুন মাসে সারা দেশের বিভিন্ন কলেজগুলোতে ভর্তি নিলেও ঢাকার কলেজগুলোতে জানুয়ারিতে ভর্তি নেয়। তাদের ওখানে স্টুডেন্টদের বেশি চাপ এজন্য তারা আগে ভাগেই ভর্তি করিয়ে টাকা উঠিয়ে ফেলে।

এলএলবি কোর্স এর খরচাদিঃ

ভর্তির সময় ৯০০০ টাকা লেগেছিল আমার। এক বছর পর ফর্ম ফিলাপে ৭০০০ টাকা লাগে। পরের বছরও সেম। মানে দুই বছরে মোট ৩২০০০ টাকা লাগে। দুই বছরে সকল বোর্ড বই কিনলে আরো ৭/৮ হাজার টাকা লাগবে। মোট ৪০ হাজার টাকার মতো খরচ হবে। তবে কেউ কেউ বোর্ড বই কিনে না। ৬০০ টাকার একটা গাইড বই কিনেও একটা ইয়ার পার করা সম্ভব! রেজাল্টও ভালো হবে। তবে আপনি জানবেন কম। যেহেতু এটা ব্যবহারিক পেশা সেহেতু বোর্ড বইয়ের পুরো সেটটা কিনে ফেলাই ভালো। রেজাল্ট দিয়ে কি করবেন? যদি ওকালতির জ্ঞানি না থাকে!?

এই কোর্সের ডিমান্ড কেমনঃ

বাংলাদেশের সবচেয়ে স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ। এখানকার অনেক স্টুডেন্টদেরও আমি এই কোর্সে ভর্তি হতে দেখেছি। এটা স্বাধীন পেশা। আপনি কাজ করলে টাকা, না করলে নাই। মানুষের রুভি রুচি কখন চেঞ্জ হয় বলা যায় না। হয়তো ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আপনি এলএলবিতে অনার্স পড়তে পারেননি। কিন্তু পরবর্তীতে আপনার ইচ্ছা হলো। আপনি এখন এটা করে ফেলুন।

এই কোর্সের শিক্ষাপদ্ধতিঃ

এই কোর্স পুরোটাই বাংলায়। অনেক সহজ লেগেছে আমার কাছে। তেমন জটিল কিছুই নেই। প্রথম বছর সাতটা সাবজেক্ট দ্বিতীয় বছর আটটা। মোট ১৫০০ মার্কস । ক্লাস তেমন একটা করতে হয় না। আর ফাইনাল পরীক্ষা গুলো শুক্রবারে হবে সুতরাং চাকুরীজীবী বা যারা ব্যস্ত থাকেন তারাও এই কোর্স আরামে করতে পারবেন।

এই কোর্স কারা করবেনঃ

যাদের রাজনীতি করার ইচ্ছা আছে, যারা বিভিন্ন দক্ষতা নিজের মধ্যে Build Up করতে চান, যারা উকিলের গাউন পড়ে কোর্টে বিতর্ক করবেন চিন্তা করতেই ভালো লাগে, যারা ছোটবেলা থেকেই বিতর্ক করতে পারদর্শী, যারা জীবনের কোনো এক সময়ে কোর্টে প্র্যাকটিস করে অতিরিক্ত কিছু টাকা রোজগার করতে চান! তারা এই কোর্স করতে পারেন। আমাদের সাথেও অনেক মধ্যবয়স্ক লোক এই কোর্স করছেন। যারা কিছু বছর চাকুরি করে, ব্যবসা শেষে আবার ভেবেছেন ওকালতি পেশা টাই ভাল ছিল! তারা ৫০ বছর বয়সে আবার এই পেশায় আসতে চাচ্ছেন!

এই কোর্স করে উকিল হওয়ার পদ্ধতিঃ

এই কোর্স শেষে বার কাউন্সিলের একটা পরীক্ষা হয়। নৈর্ব্যক্তিক, লিখিত, মৌখিক। এই ধাপগুলো সম্পন্ন করলেই আপনি সরকারিভাবে লাইসেন্স প্রাপ্ত হবেন ওকালতি করার জন্য। বাংলাদেশের যে কোন জেলায় আপনি ওকালতি করতে পারবেন।

লেখক: বাপ্পী শাহ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top