ফ্রিল্যান্সিং এ সফল হওয়ার উপায় – যেভাবে দক্ষ হতে পারেন ফ্রিল্যান্সিংএ
নিজের সত্যিকার সম্ভাবনাকে খুঁজে বের করে স্বাধীনভাবে ফ্রিল্যান্সিং কে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেয়া কিন্তু খুব কঠিন একটি সিদ্ধান্ত। যদিও অনলাইনে অর্থ উপার্জনের সবচেয়ে নিরাপদ মাধ্যম হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। পরিসংখ্যান এর মতে প্রতি ৩ জনের মধ্যে অন্তত ১ জন ফ্রিল্যান্সার ভবিষ্যতে সাকসেস বা স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারেন। ইতিমধ্যেই ফ্রিল্যান্সিং পেশায় প্রতিযোগিতা বহুগুন বেড়ে গেছে, বর্তমানে এই পেশায় টিকে থাকা বেশ মুশকিল। তাই এতো প্রতিযোগির মধ্যেও নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতা দিয়ে একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করে নিতে হয় আমাদের।
সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার কৌশল শর্টকার্ট কোন রাস্তা নেই এই ফিল্ডে আপনাকে টিকতে হলে সব সময় আপডেট এবং অনুশীলন এর উপর থাকতে হবে।
আপনি কোন কাজে পারদর্শী বা আপনার যে কাজ ভাল লাগে আপনি সেই কাজ করবেন । কিন্তু সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার আপনার স্কিলসেট অনুযায়ী আপনাকে কাজ জানতে হবে। এই ভাবে আগে ভাল করে এক বছর কাজ শেখবেন তার সাথে সাথে ইংরেজী শেখবেন। এরপর আপনি নিজেকে দক্ষ মনে করেন তারপর মার্কেটপ্লেস এর দিকে আগাবেন । মার্কেটপ্লেস এ একাউন্ট খোলার সাথে সাথে নতুন কোন জবে এ্যপ্লাই করবেন না। আগে মার্কেটপ্লেস এর টার্মস এন্ড কন্ডিশন , পলিসি সর্ম্পকে জানুন প্রয়োজন হলে ১ – ২ মাস সময় নেন তারপর বিড করুন।
সফল ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কিছু বিষয়ে মনোযোগ দেয়া এবং সে অনুযায়ী চেষ্টা করতে পারেন।সে বিষয়ে নিম্নে আলোচনা করা হলো, আশা করি আপনাদের কাজে লাগবে।
১. শেখা এবং পরিপূর্ণ দক্ষ হয়ে ওঠার বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে-
টিকে থাকার জন্য শেখা সবার আগে প্রয়োজন। কারণ গড়পড়তা বা মাঝামাঝি মানের দক্ষতা দিয়ে যে কোন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে দীর্ঘ সময়ের জন্য টিকে থাকা মুশকিল। সেক্ষেত্রে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে থাকুন, বিষয়টির খুটি-নাটি সবকিছু জানুন তাহলেই সফলতা আসবে আপনার দোরগোড়ায়।
২. লক্ষ্য রাখুন নিজের প্রোফাইলে–
ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনার একটি ভালো প্রোফাইল তৈরি করার পরই ক্লায়েন্টের সাথে কথা বলা উচিত। একটি ভালো প্রোফাইলের জন্য নিচের বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে পারেন।
৩। সময়ের সঠিক ব্যবহার
ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে সময় অতি মূল্যবান একটি সম্পদ। আপনার সময়কে সাজিয়ে নিন যাতে করে এর সঠিক ব্যবহার সম্ভব হয়। টাইম ট্র্যাকার অ্যাপ ব্যবহার করুন। নোট নেয়ার জন্য এভারনোট, গুগল কিপ এর মত টুলস গুলোর সাহায্য নিন। সময় মত ক্লাইন্ট এর কাজ শেষ করুন। সময়ানুবর্তিতা এবং দায়িত্বশীলতা ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে খুবই জরুরি।
৪। ঠিক কাজটি নির্বাচন করা
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে অনেক অসৎ লোকও রয়েছে। এজন্য কাজ নেয়ার আগে ক্লাইন্ট নির্ভরযোগ্য কিনা তা ভালভাবে যাচাই করে নিন। পেমেন্ট মেথড ভেরিফাইড কিনা, ক্লাইন্ট এর রেটিং কিরকম আছে, ক্লাইন্ট এর ব্যাপারে অন্যদের রিভিউ কী বলে ইত্যাদি খেয়াল করুন। কাজ শেষ হয়ে গেলে ক্ল্যায়েন্ট পেমেন্ট নিয়ে লুকোচুরি খেললে সরাসরি সাপোর্টে যোগাযোগ করুন।
৫. পরিমানের চেয়ে কাজের মানের উপর বেশি নজর দিন–
একজন ভালো ফ্রিল্যান্সার সবসময়ে চেষ্টা করেন তার কাজ ও দক্ষতার সাথে যায় এমন প্রজেক্ট বেছে নিতে। তাই যে কোন প্রজেক্টের কাজে হাত না দিয়ে বেছে বেছে নিজের এবং ক্লায়েন্টদের পছন্দের ওপর ভিত্তি করে ভালো কাজ করাটাই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।
৬. ক্লায়েন্টের মূল সমস্যা সমাধানের দিকে লক্ষ্য রাখা–
যখন আপনি একটি প্রজেক্টের কাজে হাত দেবেন তখন ক্লায়েন্ট কি চান তা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করুন। এক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখতে পারেন।
– তার উল্লেখিত সমস্যা সমাধানে আপনি কিভাবে সাহায্য করতে পারেন তা জানতে চান
– চেষ্টা করুন তার দেয়া প্রজেক্ট সম্পর্কিত পোর্টফোলিও দিতে। আপনার সম্পূর্ণ পোর্টফোলিও এক্ষেত্রে না দেয়াই ভালো।
৭. কাজের ভ্যালুর দিকে ফোকাস করুন–
এশিয়ার দেশগুলোতে ফ্রিল্যান্সারদের সবচেয়ে বড় ভুল হচ্ছে তারা বিড করার সময় নানানভাবে অনুরোধ বা অন্য কোনভাবে ক্লায়েন্টকে নোটিশ করানোর চেষ্টা করেন। আসলে এ ধরণের কাজ কোন কাজে আসে না। তাই কাজের জন্য অনুরোধ না করে নিজের কাজের মান ও ভ্যালুর দিকে ফোকাস করুন। ক্লায়েন্ট এর সামনে আত্মবিশ্বাসের সাথে আপনার দক্ষতা তুলে ধরুন। দেখবেন এমনিতেই ক্লায়েন্টরা আপনার দিকে এগিয়ে আসছেন।
ফ্রিল্যান্সিং এ সফল হওয়ার উপায়
তাছাড়া
- ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টমাইজেশনঃ আপনি ৩/৪ মাসে ইনকাম শুরু করতে চাইলে শিখতে পারেন ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টমাইজেশন। কোনপ্রকার কোডিং ছাড়া ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন যার চাহিদা রয়েছে আকাশচুম্বি। কারন, এই ওয়েবসাইট মেইনটেইন করা ক্লায়েন্ট এর জন্য অনেকটা সহজ। আপনি প্রতিদিন ৩/৪ ঘন্টা সময় দিলে খুব ভালোভাবে শিখে নিতে পারেন এই স্কিল।
- গ্রাফিক ডিজাইনঃ গ্রাফিক ডিজাইনের শুধু প্রিন্ট ম্যাটেরিয়াল ডিজাইন এবং লোগো ডিজাইন শিখতে পারেন এই সময়ের মধ্যে, যার অনেক চাহিদা রয়েছে মার্কেটপ্লেসে। তবে গ্রাফিক ডিজাইন ভালোভাবে শিখা এবং কনসেপ্ট তৈরি করতে আপনাকে প্রতিদিন ৬/৭ ঘন্টা প্র্যাকটিস করে যেতে হবে। কোনো ফাঁকিবাজি করার সুযোগ নেই।
- ডিজিটাল মার্কেটিং: ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ শেখা তুলনামূলক সহজ কিন্তু অনেক রিসার্চ করতে হয়। যদি আপনার ঘাটাঘাটি করে শেখার আগ্রহ থাকে তাহলে এই স্কিল ডেভেলপ করতে পারেন।
এই কাজগুলোর বর্তামানে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে প্রচুর চাহিদা রয়েছে তাই এগুলোর দিকে ফোকাস দিন।