কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা - ছোলার পুষ্টিগুণ

কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা – ছোলার পুষ্টিগুণ

কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা – ছোলার পুষ্টিগুণ

ছোলা খাওয়ার উপকারিতা : ছোলা একটি ডালজাতীয় খাদ্যশস্য। এটি কার্ডিও’ভাসকুলার পুষ্টিতে ঠাসা। এটি ফাইবার এবং সিয়ামেও পূর্ণ। এটি আমিষের একটি উল্লেখযোগ্য উৎস।শুধু তাই নয় ছোলা ভিটামিন ও  প্রোটিন সমৃদ্ধ যা আমাদের কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করতেও সহায়তা করে। এটি এমন একটি খাবার যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে। 

ছোলায় আমিষের পরিমাণ মাংস বা মাছের আমিষের পরিমাণের প্রায় সমান। তাই খাদ্য তালিকায় ছোলা থাকলে মাছ-মাংস পরিমাণে কম থাকলেও চলে। আমাদের দেশের মত উন্নয়নশীল দেশে ছোলাকে মাছ বা মাংসের বিকল্প হিসাবেও ভাবা যেতে পারে। ছোলার ডাল, তরকারিতে ছোলা, সেদ্ধ ছোলা ভাজি, ছোলার বেসন, ছোলা ভুনা— নানান উপায়ে ছোলা খাওয়া যায়।

প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় আছে প্রায় ১৭ গ্রাম আমিষ বা প্রোটিন, ৬৪ গ্রাম শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট এবং ৫ গ্রাম ফ্যাট বা তেল। ছোলার শর্করা বা কার্বোহাইড্রেটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। খাওয়ার পর খুব তাড়াতাড়িই হজম হয়ে গ্লুকোজ হয়ে রক্তে চলে যায় না; বেশ সময় নেয়। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ছোলার শর্করা ভাল। ছোলার ফ্যাট বা তেলের বেশির ভাগই পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়।

কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা - ছোলার পুষ্টিগুণ
ছোলার পুষ্টিগুণ

প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট ছাড়া ছোলায় আরও আছে বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ লবণ। প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় ক্যালসিয়াম আছে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম, লৌহ ১০ মিলিগ্রাম, ও ভিটামিন এ ১৯০ মাইক্রোগ্রাম। এ ছাড়াও আছে ভিটামিন বি-১, বি-২, ফসফরাস ও ম্যাগনেশিয়াম। এ সবই শরীরের জন্য কাজে লাগে। ছোলায় খাদ্য-আঁশও আছে বেশ। এ আঁশ কোষ্ঠ কাঠিন্যে উপকারী। খাবারের আঁশ হজম হয় না। একইভাবে খাদ্যনালী অতিক্রম করতে থাকে। তাই মলের পরিমাণ বাড়ে এবং মল নরম থাকে। এতে কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর হয়। মলত্যাগ করা সহজ হয়। নিয়মিত মলত্যাগ হয়ে যায় বলে ক্ষতিকর জীবাণু খাদ্যনালীতে থাকতে পারে না। ফলে খাদ্যনালীর ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা কমে। খাদ্যের আঁশ রক্তের চর্বি কমাতেও সহায়ক। আরও নানান শারীরিক উপকারিতা আছে খাদ্য-আঁশে। দেরীতে হজম হয়, এরূপ একটি খাবার হচ্ছে ছোলা। ছোলা দীর্ঘক্ষণ ধরে শরীরে শক্তি যোগান দিতে সক্ষম। প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলা থেকে প্রায় ৩৬০ ক্যালরিরও বেশি শক্তি পাওয়া যায়। ছোলা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

আরো পড়ুন: হলুদ দাঁত ধবধবে সাদা করার উপায় মাত্র একদিনে
আরো পড়ুন: রসুন চাষের নিয়ম

ছোলার ১২টি স্বাস্থ্য উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

ছোলার পুষ্টিগুণ উপাদান হিসেবে যথেষ্ট পরিমাণে ক্যালরি, ফ্যাট, শর্করা, আমিষ, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ইত্যাদি সঠিক পরিমাণে থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম বিশুদ্ধ ছোলাতে আমিষ থাকে ১৮-২০ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট থাকে ৬০-৬৫ গ্রাম, ফ্যাট থাকে ৫-১০ গ্রামের কাছাকাছি। ছোলাতে যে পরিমাণ শর্করা থাকে তার মধ্যে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই কম থাকে। সাধারণত দৈনন্দিন জীবনে আমরা যে সমস্ত খাবারগুলো খেয়ে থাকি, তা খাওয়ার সাথে সাথেই হজম হয়ে গ্লুকোজ হয়ে যায় এবং রক্তের সাথে মিশে শরীরে প্রবাহিত হওয়া শুরু করে। কিন্তু ছোলার ক্ষেত্রে এই চক্রটি ভিন্নভাবে হয়ে থাকে। অর্থাৎ ছোলা খাওয়ার পর পাকস্থলিতে গিয়ে সাথে সাথে হজম হয় না এবং গ্লুকোজ রক্তের সাথে মিশে না। যে কারণে ডাক্তারগণ ডায়াবেটিস রোগীদের স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য ছোলার শর্করাকে অনেক ক্ষেত্রেই সাপোর্ট করে থাকে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে ছোলা

সাধারনত হাইপারটেনশন থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ফলিক এসিডযুক্ত খাবার খেতে হয় বা ঔষধ খেতে হয়। ফলিক এসিড মহিলাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে পাশাপাশি পুরুষদেরও। ছোলাতে আছে যথেষ্ট পরিমাণে ফলিক এডিড। সুতরাং ব্লাডপ্রেসার বা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ছোলা বেশ কার্যকারী। তাই মেয়েদের হাইপারটেনশন রোধ করতে নিয়মিত ছোলা খাওয়া হতে পারে অনন্য একটি উপায়।

কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা – ছোলার পুষ্টিগুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top