প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম, ইয়াসীন আরাফাত

প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম এর ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ – ইয়াসীন আরাফাত

আজ ১১ই মার্চ ২০২২, ভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা এবং বাঙলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম এর ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯১ সালের আজকের দিনে বিশিষ্ট এই ব্যক্তিত্বের প্রয়াণ ঘটে।

প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম, তিনি ১৯২০ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ, লেখক, সমাজসেবক এবং বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী। তিনি বাংলা ভাষা আন্দোলনের স্থপতি এবং বাঙলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলার মাধ্যমে শিক্ষাদানের গুরুত্ব অনুধাবন করে ‘বাঙলা কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেন এবং বাঙলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল (১৯৬২-১৯৮১) ছিলেন তিনি।

তিনি ছিলেন একজন প্রতিভাবান লেখক, প্রিন্সিপাল আবুল কাশেম স্নাতকোত্তর ছাত্রদের জন্য এবং শিক্ষা, ইসলাম, সংস্কৃতি ও রাজনীতি বিজ্ঞানের পাঠ্যবই সহ প্রায় ১০০টি বই রচনা করেন। এর মধ্যে ৪০টি পদার্থবিদ্যার পাঠ্যবই এবং কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিজ্ঞান বিষয় রয়েছে। তার রচিত কয়েকটি উল্লেখ্যযোগ্য গ্রন্থ হলো- পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা (১৯৪৭), একমাত্র পথ (১৯৪৯), মুক্তি কোন পথে (১৯৫২), ঘোষণা (১৯৫২), ইসলাম কি দিয়েছে এবং কি দিতে পারে (১৯৫২), বিবর্তনবাদ (১৯৫২), শ্রেণীসংগ্রাম (১৯৫৩), দু’টি প্রশ্ন (১৯৫৫), শাসনতান্ত্রিক মূলনীতি (১৯৫৫), একুশ দফার রূপায়ণ (১৯৫৫), আধুনিক চিন্তাধারা (১৯৬৪), সংগঠন (১৯৬৪), ইসলামি রাষ্ট্রনীতি, কোরানিক অর্থনীতি ইত্যাদি।

১৯৪৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর ‘তমদ্দুন মজলিস নামে একটি সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। মজলিসের পক্ষ থেকে ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা, না উর্দু নামে একখানি পুস্তিকা প্রকাশ করেন। এতে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপন করেছিলেন। তমদ্দুন মজলিসের মুখপত্র হিসেবে সাপ্তাহিক সৈনিক পত্রিকা প্রকাশ (১৪ নভেম্বর ১৯৪৮) ও পরিচালনা (১৯৪৮-১৯৬১) করেছেন। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ঢাকাসহ সারা পূর্ব বাংলায় যে ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয় এবং ১৫ মার্চ (১৯৪৮) পূর্ববঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ও রাষ্ট্রভাষা সংগ্রামীদের মধ্যে যে ৮ দফা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, তার অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন তিনি।

বিশিষ্ট এই ব্যাক্তি বেশ কিছু সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন তার মধ্যে জাতীয় স্বীকৃতি হিসাবে তিনি বাংলা কলেজ ছাত্র মজলিস সমিতি পুরস্কার ও রাইর্টাস গিল্ড পুরস্কার (১৯৬৪), বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৮২), একুশে পদক (১৯৮৭), স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (১৯৯৩), ইসলামিক ফাউন্ডেশন পুরস্কার ও চট্টগ্রাম সমিতি পদক (১৯৮৮) এবং জাতীয় সংবর্ধনা স্বর্ণপদক (১৯৮৯) উল্লেখ্যযোগ্য।

ভাষা আন্দোলনে এবং বাঙলায় শিক্ষার প্রসারে তার অবদান অবিস্মরণীয় এবং যুগ যুগ ধরে বাঙলার প্রতিটি হৃদয় জুড়ে থাকবেন তিনি।

১৯৯১ সালের ১১ মার্চ (আজকের এই দিনে) এ মহান গুণী মৃত্যুবরণ করেন। মহান এই ব্যক্তির মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

লেখক: ইয়াসীন আরাফাত।।

ফেইসবুক আইডি: facebook.com/staywitharafats

আরও নিউজ:

ক্লাসে ঢুকে ছাত্রীদের হিজাব খুলে নিলেন চেয়ারম্যান

Are we heading for World War III? – Tanvir Hasan Santo

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top