surokkha gov bd সুরক্ষা নিত্য সংবাদ - Bangla Latest News | ব্রেকিং নিউজ | Bangla News 24

সুরক্ষা ওয়েবসাইটে নিবন্ধন বাড়ছে, এখনই সংকট ২ কোটি টিকার

দেশে করোনা প্রতিরোধে চলছে গণ-টিকাদান ক্যাম্পেইন। প্রতিদিনই টিকার নিবন্ধন’কারীর সংখ্যা ১২ থেকে ১৫ লাখ করে বাড়ছে। টিকার জন্য নিবন্ধন’কারীদের এই মুহূর্তে প্রায় ৩ কোটি টিকার প্রয়োজন। অথচ সরকারি হিসাবে টিকা হাতে আছে প্রায় ৮১ লাখ ডোজ।

হিসাব করে দেখা যায়, দেশে ২ কোটির বেশি টিকার ঘাটতি রয়েছে। এই মাসে’র মধ্যে টিকার বড় কোনো চালান দেশে না আসলে সমস্যায় পড়বেন টিকাপ্রত্যাশী নিবন্ধনকারীরা।

সংকট সামাল দিতে হিম’শিম খেতে হবে স্বাস্থ্য বিভাগকেও।
এদিকে, টিকার ক্যাম্পেইনে ৬ দিনে ৩২ লাখ টিকা দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু গণটিকা দেয়ার প্র’থম দিনই দেশে একদিনে সব মিলিয়ে রেকর্ড সংখ্যক ৩০ লাখের বেশি মানুষ টিকা নিয়েছেন।

ক্যাম্পেইনের প্রথম দিনই লক্ষ্যের ৯২ থেকে ৯৫ শতাংশ মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ৭ই আগস্ট পর্যন্ত দেশে করোনা ভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি শুরুর পর এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ১ কোটি ৭৫ লাখ ৭০ হাজার ২৮৪ ডোজ।

এর মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১ কোটি ৩০ লাখ ৭২ হাজার ৯৬৯ জন এবং টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৪৪ লাখ ৯৭ হাজার ৩১৫ জন। প্রথম দিনের ৫টি জেলার হিসাব যোগ করলে এবং গতকালের নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচির সঙ্গে আরও কমপক্ষে ৪ লাখ টিকা যোগ করে টিকার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণকারীর সংখ্যা ৪৪ লাখ ৯৭ হাজার ৩১৫ জনকে বাদ দিলে ৯২ লাখের মতো মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দিতে হবে।


আর টিকা নিতে ৮ই আগস্ট বেলা আড়াইটা পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ২ কোটি ৪৪ লাখ ৮৭ হাজার ৫২৪ জন। যদি প্রথম ডোজ গ্রহণকারীর সংখ্যা ১ কোটি ৩৬ লাখ বাদ দেয়া হয় তাহলে এক কোটির কিছু বেশি মানুষকে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ টিকা দিতে হবে। সেই হিসাবে ১ কোটি মানুষকে কমপক্ষে ২ কোটি ডোজ টিকা এবং ৯২ লাখের মতো মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দিতে হবে। অর্থাৎ প্রায় ৩ কোটি টিকা লাগবে। কিন্তু টিকা হাতে মজুত আছে ৮১ লাখের মতো। সম্ভাব্য ঘাটতি টিকার পরিমাণ হবে ২ কোটির বেশি। গণটিকা কর্মসূচিতে যেসব টিকা দেয়া হচ্ছে তা হলো- অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকা, চীনের তৈরি সিনোফার্ম, ফাইজার এবং মডার্নার ভ্যাকসিন। শনিবার দেশব্যাপী গণটিকা দেয়া শুরু হয়। আর তাতে প্রথম ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে ২৭ লাখ ৮৩ হাজার ১৭২ জনকে। এর আগে নিয়মিত দৈনিক আড়াই লাখ থেকে ৩ লাখ পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকা দেয়ার রেকর্ড ছিল দেশে।
অধিদপ্তর আরও জানায়, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর ও সিলেট জেলার গণটিকাদানের নারী ও পুরুষের আলাদা হিসাব না আসায় তা মূল তথ্যে যোগ হয়নি শনিবার। পরবর্তীতে তা প্রতিবেদনে যোগ করে দেয়া হবে। এ ছাড়া শনিবার নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচিতে ৫৩ হাজার ৭৯৮ জন দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছেন।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ শনিবার কেউ পায়নি এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২৭ হাজার ৭৯ জন। এখন পর্যন্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৮ লাখ ২০ হাজার ৬৩ জন। আর দ্বিতীয় ডোজ নি’য়েছেন ৪৩ লাখ ৭১ হাজার ৩১০ জন।

এদিন ফাইজারের প্রথম ডোজও কাউকে দেয়া হয়নি এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৪ হাজার ৬৭৪ জন। এখন পর্যন্ত দেয়া হয়েছে ১১ হাজার ৭১২ ডোজ। এ ছাড়া সিনোফার্মের ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে এখন পর্যন্ত প্রথম ডোজ ৫৮ লাখ ১৭ হাজার ৩৩ জনকে আর দ্বিতীয় ডো’জ দেয়া হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ২৯৩ জনকে। মডার্না প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১৩ লাখ ৮৫ হাজার ৬১৮ জন। এখন পর্যন্ত এই টিকার দ্বিতীয় ডোজ কেউ গ্রহণ করেনি। দেশে এ পর্যন্ত কেনা ও উপহার মিলে মোট টিকা এসেছে ২ কোটি ৫৬ লাখ ৪৩ হাজার ৯২০ ডোজ।

এর থেকে বিতরণ করা হয়েছে ১ কোটি ৭৫ লাখ ৭০ হাজার ২৮৪ ডোজ। টিকা মজুত আছে ৮০ লাখ ৭৩ হাজার ৬৩৬ ডোজ।


এদিকে, সারা দেশে শনিবার থেকে গণটিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু হয়। সিটি করপোরেশন, ইউনিয়ন-ওয়ার্ড ও বিভিন্ন অঞ্চল ভেদে ৭ই আগস্ট থেকে ১২ই আগস্ট পর্যন্ত চলবে এই ক্যাম্পেইন। ১৮ বছর বয়সী অনেকের এনআইডি না থাকায় বয়সসীমা ২৫ বছর থাকছে টিকা ক্যাম্পেইনে। ৭ই আগস্ট থেকে শুরু হতে যাওয়া ক্যাম্পেইনে ২৫ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠী; অগ্রা’ধিকার ভিত্তিতে পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়স্ক জনগোষ্ঠী, নারী ও শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনার কথা বলছে সরকার। ক্যাম্পেইনের প্রথম দিন দেশের সব ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর’পোরেশন এলাকায় ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন শুরু হয়। ৮ ও ৯ই আগস্ট ইউনিয়ন ও পৌরসভার বাদ পড়া ওয়ার্ডে এবং ৭ থেকে ৯ই আগস্ট সিটি করপোরেশন এলাকায় টিকাদান কর্মসূচি চলবে। দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ৮ ও ৯ই আগস্ট ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম চালু থাকবে।

১০ থেকে ১২ই আগস্ট জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের জনগোষ্ঠীর ৫৫ বছর বয়সী জনগোষ্ঠীর মধ্যে কোভিড-১৯ ভ্যাক’সিনেশন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। ক্যাম্পেইনের আওতায় টিকা পাবেন ৩২ লাখ মানুষ। তারা যথা সময়ে টিকার দ্বিতীয় ডোজও পাবেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যর মহাপরিচালক। প্রসঙ্গত, দেশে টিকা কার্যক্রম শুরু হয় এ বছরের ২৭শে জানুয়ারি এবং গণটিকাদান শুরু হয় ৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে।


রাজশাহীতে ভ্যাকসিন শেষ, বন্ধ গণটিকা কার্যক্রম: রাজশাহী নগরীতে দুই দিনেই শেষ হয়ে গেছে করোনার টিকা। ফলে বন্ধ করা হয়েছে ওয়ার্ড পর্যায়ে গণটিকা প্রদান কার্যক্রম। রবিবার (৮ আগস্ট) রাতে এম’নটা জানিয়েছে রাজ’শাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) কর্তৃপক্ষ। তবে সরকার নির্ধারিত শুধুমাত্র ৪টি কেন্দ্রে সোমবার (৯ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে চলছে টিকা প্রদান। এটি চলমান থাকবে। রাসিক সূত্রে জানা গেছে, গণটিকা কার্যক্রমের দুইদিনে ৭৮ হাজার ৮৭৩ জনকে টিকা প্রদান করা হয়। এরমধ্যে প্রথমদিন শনিবার (৭ আগস্ট) ৩৪ হাজার ৩৮৫ জনকে এবং দ্বিতীয় দিন রবিবার (৮ আগস্ট) ৪৪ হাজার ৪৮৮ জনকে প্রদান করা হয়েছে করোনা টিকা। প্রথমদিনে নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ৮৪টি কেন্দ্রে ২৭ হাজার ২৫৬ জনকে প্রথম ডোজ মর্ডানার টিকা দেয়া হয়। এছাড়া ৫২৯ জনকে সিনোফার্ম ও ১৪২০ জনকে প্রদান করা হয় কোভিশিল্ড টিকা।


আর দ্বিতীয় দিন প্রথম ডোজ মর্ডানার টিকা পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৬৬৪ জন। এদের মধ্যে ১৮ হাজার ৪৭৩ জন পুরুষ এবং ১৮ হাজার ১৯১ জন নারী। এদিন মর্ডানা টিকার বাইরে ১৭৪ জনকে সিনো’ফার্ম এবং ১৬৯০ জনকে প্রদান করা হয়েছে কোভিশিল্ড টিকা। প্রতিটি কেন্দ্রে টিকাদানে নিয়োজিত ছিলেন দুইজন স্বাস্থ্যকর্মী ও তিনজন স্বেচ্ছাসেবী।


ওয়ার্ডে গণটিকা কার্যক্রম বন্ধ হলেও সোমবার সকাল ৯টা থেকে নগরীর চার কেন্দ্রে টিকা দেয়া হচ্ছে। কেন্দ্রগুলো হলো- রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (টিচার্স ট্রেনিং কলেজ), পুলিশ হাসপাতাল, আইডি হাসপাতাল ও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএএইচ)। যারা টিকা গ্রহণে মোবা’ইলে এসএমএস পেয়েছেন, শুধুমাত্র তাদের প্রদান করা হচ্ছে টিকা। নিবন্ধনের ক্রমানুসারে এসএমএসে টিকা গ্রহণের বিষয়ে পূর্বেই জানিয়ে দেয়া হয়। এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এফএমএ আঞ্জুমান আরা বলেন, টিকা না থাকায় আপাতত স্থগিত করা হয়েছে ওয়ার্ড পর্যায়ে টিকাদান ক্যাম্পেইন। তবে সোমবার থেকে শুধুমাত্র সরকার নির্ধারিত চারটি কেন্দ্রে এসএমএস প্রাপ্তদের টিকা প্রদান করা হচ্ছে। টিকাপ্রাপ্তি সাপেক্ষে আবারো ওয়ার্ড পর্যায়ে টিকাদান কার্যক্রম চালু করা হবে।

করোনা টিকা নিবন্ধন লিংক: http://surokkha.gov.bd

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top